Monday, December 31, 2012

Snap shots 2012



Again the last day of the year 31.12.2012 has appeared. I am writing from Rue Prevost Martin, Geneva where I have lived for 3 years! By all means, 2012 can be regarded as a turn to a new era of life.

IMG_4532IMG_4479
The year stared with a research visit to the United States in early January to Colorado State University.  It was wonderful to visit the USA after a long wait for a visa. While returning back to Geneva I had a chance to visit New York. It was freezing cold during that time, especially when I went to the Empire State Building,  I found the temperature to be about minus 6 degrees. I must say that now I want to visit the USA again and again, but at least once during the summertime.

ফতুয়াSoon after returning back from the USA I made a trip to Bangladesh to see the national book fare. It is always fascinating to think about Dhaka but in reality it was bit different, it felt like a broken dream with extreme traffic jams and people who have less respect for one another. Anyway, the book fair chapter was amazing. It was the first time that one of the publishers wanted to publish a part of my stories that I write in the blog. More over it was wonderful to see my friends and colleagues accepted my gifts from Bangladesh.

Coming back home I took a long rest, keeping myself only at my office and home, and tried to concentrate on some research work. I submitted one research paper in the journal of regional environmental change which is under review and one of my papers has already been published in the Journal of Water Resources Management. Here is the paper:









Not too much exciting stuff happened this year; I visited several cities in Italy and in August I went to Paris, the most wonderful city in my eyes. That’s all for this year and the very last days [December 28th] I submitted another article to the Journal of Environmental Modeling and Software.
I am very much looking forward to the see the outcome of my submitted papers which will be published in 2013 and also something very special……………let’s see how it goes!

Tuesday, April 10, 2012

আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ইস্টারের ছুটিতে লিয়ন গিয়েছিলাম আমার ল্যাবম্যাটদের সাথে, ফ্রান্সের শহর লিয়ন থকে জেনেভা ফিরছি আমার প্রফেসর ইমানুয়েল আর আমি এক গাড়ীতে, বাকিরা ভাগ ভাগ করে একেকজন একেকজনের গাড়ীতে। সিট বেল্টটা বেঁধেই ইমানুয়েল গাড়ীর মিউজিক প্লেয়ারটা অন করে দিল। গাড়ী ঘণ্টায় ৮০ কি. মি. বেগে চলছে মিউজিক প্লেয়ারে রামস্টেইন ব্যান্ডের গান বাজছে “ দু- দু হাস্ত- দু-হাস্ত মেইস” [you-you have hate-you have hate me ]। এমনিতে জার্মানির হেভিমেটাল ব্যাণ্ডগুলোর গান খুব ভালো লাগে কিন্তু রাস্তায় হার্ডরক গান শুনতে কেমন এক ধরনের ভয় ভয় লাগে এক্সিডেন্টের কথা ভেবে ।

প্রফেসর ইমানুয়েল কে বললাম ভলিউমটা কি একটু কমানো যায়? সে কি মনে করে বলল তোমার সেলফোনে কি তোমাদের দেশের গান আছে? আমি চেক করে দেখলাম সর্বসাকুল্যে ৯ টা গান আছে রবীন্দ্রসঙ্গীত, শ্রীকান্ত আচার্য্য আর দুইটা দেশাত্মবোধক গান । আমার সেলফোনটা নিয়ে প্লাগইন করতেই কোমল সুরে বাংলা গান বাজতে শুরু করল

“গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙা মাটির পথ
আমার মন ভুলায় রে ”

লিয়ন থেকে জেনেভা আসার রাস্তাটা খুব স্ত্রেইট একটানা লম্বা সময় ধরে তাকায়ে থাকলে আমার চোখে কেমন এক ধরনের ক্লান্তি চলে আসে।গানের সাথে সাথে আমি ঘুমিয়ে পড়ছি । ঘোরের মাঝে দেখি বড় আপা আমার গালে হাত দিয়ে চুল আঁচড়ায়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আমরা পাশের বাড়ীতে বেড়াতে যাব আপা রাগী রাগী গলার প্রশ্ন করছে, 'কি কি শিখালাম এক এক করে বল' । আমি বললাম,

[১] বিস্কুট একটা বা দুইটার বেশি খাওয়া যাবেনা ।

[২] চা পিরিচে করে খাওয়া যাবেনা ।

[৩] মুরুব্বীরা কথা বলার সময় কথা বলা যাবেনা ।

আপা বললেন ঠিক আছে, আসলে আপা শিখায়ে দেয়ার আগে আমি কারো বাসায় বেড়াতে গেলে চা বিস্কুট খেতে দিলে, খাওয়া শেষে আসার পথে বিস্কুট যে পিরিচে দেয়া হতো- তার সবগুলো আমার ক্রিকেট খেলার বন্ধুদের জন্য পকেটে করে নিয়ে আসতাম, যেটা একদিন আপা জানার পর কঠিন শাস্তি পেয়েছিলাম কারন আপার চোখে এটা ভদ্রতার আওতায় পড়েনা।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেমন চা পানের বিরতি থাকে,তেমনি ভাবেই আমাদের ক্রিকেট খেলার এক ইনিংসের পর আমরা সবাই চা খেতে পাড়ার মোড়ে দুই দল পরস্পর থকে কিছুটা দূরত্ব রেখে চা খেতাম। আর পরের ইনিংসের ব্যাটিং/ বোলিং এর পরিকল্পনা করতাম । পরিকল্পনা পর্বটা খুব উত্তেজনার ছিল। তাই দোকানের অন্য লোকদের দেখাদেখি আমিও তপ্ত চায়ে ঠোঁট পুড়ে যাওয়ার থেকে রক্ষা পাবার জন্য চা পিরিচে ঢেলে নিতাম, যেটা আপার চোখে “ ভয়ানক অভদ্রতা” পর্যায়ের।

ক্রিকেট খেলতে গেলে মাঝে মাঝে মারামারি বেধে যেতো। শারীরিক গঠন মাঝামাঝি ছিল বলে কোন কোন দিন মার দিতাম কোন কোন দিন মার খেয়ে বাসায় ফিরতাম। মার দেই আর মার খাই মারামারি করেছি শুনলেই আর আমার নিস্তার নাই, বাসায় আসলে আপার হাতে আবার মাইর। আপার হাতে মার খেতে যতটা না খারাপ লাগতো তারচেয়ে বেশি খারাপ লাগতো মার খাওয়ার পর, ছোটবোন মুচকি মুচকি হাসতো দেখে। ইচ্ছা করতো এক চড়ে দাঁত ফেলে দেই তার ও উপায় নেই কারন বাসায় “মার্শাল ল” সামান্য মুচকি হাসির জন্য চড় দেয়া যাবেনা। এভাবে একদিন SSC HSC পরীক্ষা শেষে আপা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চলে যায় । বিকালে খেলাধুলা শেষে আপার ঘরটাতে কেমন খালি খালি লাগতো প্রথম দিকে, মনে হতো কিছুক্ষণ পরই আপা আসবে আজ কেউ বিচার দিল কিনা তার হিসাব কিতাব করতে।


এবার ভাইয়ার গল্প। আপার অনুপস্থিতিতে ভাইয়ার হাতে “পাওয়ার অফ এটর্নি” থাকত কারন আমাদের বাসায় অনেকটা ‘মার্শাল ল’ টাইপ ব্যাপার ছিল বয়স অনুযায়ী চেইন অফ কমান্ড, তবে ভাইয়া খুব বেশি মারত না সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছি স্কুলের ক্লাস ফাইভের অঙ্ক স্যারের হাতে। বেশ কিছু দিন মার খাবার পর অবশ্য আমার সহ্য হয়ে গিয়েছিল। তারপর ও হঠাত্‍ করে আজ স্যারের চেহারা মনে হতেই পিঠটা কেমন করে উঠল।

সবচেয়ে বিরক্ত লাগতো স্যারকে কোন প্রশ্ন করলেই স্যার রাগ দেখাতেন। যেমন একদিন বানরের তৈলাক্ত বাঁশে উঠানামার অংকটা আমার কাছে আজব লাগে বলে স্যারকে প্রশ্ন করেছিলাম স্যার বানর তো এত বোকা না যে তৈলাক্ত বাঁশে উঠবে আর বানরতো গাছে গাছে থাকে বাঁশ গাছে আমি কোনদিন বানর দেখিনি। ক্লাসের অন্য দুইজন জোরে হেসে উঠার সাথে সাথে স্যার বিদ্যুৎ গতিতে একটা চটাশ থাবড়া বসায়ে দিলেন আমার গালে। উদ্ভট প্রশ্ন করার কারনে আমার আর বৃত্তি পরীক্ষার বাছাই পর্বে চান্স পাওয়া হলনা। কিন্তু প্রশ্নটা প্রায় আমার মাথায় ঘুরাঘুরি করতো বানর কেন তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঠতে যাবে।

ভাইয়াকে ও একই প্রশ্ন করাতে ভাইয়া হাসি দিয়ে এইটা আসলে রূপক অর্থে বলে অঙ্কটা বুঝিয়ে দিল । কোন বিচিত্র কারনে ভাইয়া যে জিনিসগুলা সাপোর্ট করতো আমিও তাই সাপোর্ট করতাম, ফুটবলের উত্তেজনা তখন প্রায় শেষের দিকে ভাইয়া আবাহনী সাপোর্ট করতো তাই আমিও সাপোর্ট করতাম। এক সময় ভাইয়া গণতন্ত্র ভালো না সমাজতন্ত্র ভাল বলল, আমি ও বন্ধুদের সাথে আলাপ করতাম সমাজতন্ত্রই ভালো আসলে আমি সমাজতন্ত্র বিষয়টা কি এইটাই ভাল মতো বুঝতাম না (এখনো ভালো মতো বুঝিনা..)

H.S.C পরীক্ষার পর ভাইয়া বিমানবাহিনীতে ঢোকার জন্য নানা রকম ব্যায়াম সামগ্রী কিনে এনে কঠিন ব্যায়াম শুরু করে দিল সাথে আমি ও টুকটাক চেষ্টা করতে লাগলাম। I.S.S.B না কি যেন একটা পরীক্ষা দিতে ভাইয়া প্রথম বাসা থেকে বের হয়। স্কুল কলেজের রেজাল্ট, শারীরিক গঠন সব মিলায়ে আমরা সবাই ভাবতাম ভাইয়া চান্স না পেলে আর কে পাবে ! তার উপর ভাইয়া যেদিন থেকে পরীক্ষা দিতে গেছে সেই দিন থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির মতো আম্মার নফল নামাজ পড়া দেখে আমি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিলাম ভাইয়া অবশ্যই চান্স পাবে।

এটাও ঠিক করেছিলাম ভাইয়া বিমানবাহিনীতে ঢুকার পর পাড়ার পাতি মাস্তান গুলার পিঠের ছাল তুলে নিব। আগে যত মাইর খাওয়া আছে সব শোধবোধ। কিন্ত আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভাইয়া পরীক্ষার শেষ দিন ভেজা চোখে ফিরে এসে আম্মাকে জানাল তার আকাশে উড়ার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ হবেনা। আমারও পাতি মাস্তানদের পিঠের ছাল তুলে নেয়ার স্বপ্নটা অপূর্ণই রয়ে গেল।



অতঃপর কোন এক দুপুরে আপার মতো ভাইয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বাসা থেকে হলে চলে গেল । আমার রাজ্যে আমি একা শাসন করার কেউ নেই। কিছুদিন একা থাকার পর কেন যেন আর ভাল লাগতোনা, মনে মনে চাইতাম ভাইয়া আপা আবার বাসায় চলে আসুক, কিন্ত সেভাবে আর কোনদিন ফিরে আসা হয়নি তাদের । বিদেশে পাড়ি দেবার আগে ঈদে আমাদের সবার দেখা হতো কিন্তু এখন এই সুযোগটাও নেই একেক জন একেক মহাদেশে থাকি, আমার পরীক্ষা ভাইয়া আপার বাচ্চাদের স্কুল হরেকরকম ব্যস্ততা।

এলোমেলো ভাবতে ভাবতে আমরা জেনেভা চলে এসেছি। ইমানুয়েল আমাকে বলল, 'তোমাদের দেশের গান তো খুব সুন্দর আমাকে কাল একটা কপি দিও।' মাঝে মাঝে বাজাবো। আমি হাসি দিয়ে সম্মতি দিয়ে বিদায় জানিয়ে বাসায় ফিরে আসি ।

প্রতিবার দেশে গেলে আমি আমার ফেলে আসা দিন গুলাকে খুঁজে বেড়াই। আমার স্কুল, ধুলোমাখা গিটার আর যত্ন করে রাখা ক্রিকেটের ব্যাট। মাঝে মাঝে পথ চেয়ে থাকি ভাইয়া, আপা, আমরা সবাই কোন একটা দিন সেই পুরোনো দিনগুলোতে ফিরে যাবো । গাড়ীতে বাজতে থাকা গানগুলার একটার কথা ছিল অনেকটা এরকম :

“আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
খেলে যায় রৌদ্র ছায়া
বর্ষা আসে বসন্ত
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ”
............... ............... .......

সময়ের প্রয়োজনে আমরা আজ একেক জন একেক মহাদেশে থাকি।
হয়তো কোনদিন সবার এক সাথে ফেরা হবেনা তারপর ও আমি পথ চেয়ে থাকি...



Friday, March 23, 2012

[ভেজা চোখের এশিয়া কাপ]



৩.২৩.২০১২ সকাল ৯ টা। ভেবেছিলাম লম্বা একটা ঘুম দিলে গতকালের অনেক কিছুই ভুলে যাব। ভোলা হলো না আমার। গতরাত বেশ কয়বার ঘুম ভেঙ্গে গেছে উত্তেজনায়। বার বার মনে হচ্ছিল খেলা এখনো আমাদের হাতে। ৬ বলে ৯ রান উইকেট হাতে আছে সুতরাং আমরা জিতবোই, ফর শিওর!

গতকাল খেলা শেষে সুয়েটারের হাতা দিয়ে নীরবে চোখ মুছতেছিলাম হঠাৎ আমার ল্যাবম্যাট নিকোলাস দেখে ফেলে বলল," তুমি কাঁদছ কেন?" তারপর তুমিই বললা যে খেলা শেষ হয়ে গেছে ঘণ্টা খানেক আগে এখন কাঁদছ কেন? আমাদের ‘রজার ফেদেরার’ যখন ‘রাফায়েল নাদালের’ কাছে হারে আমাদের অনুভূতিও তোমার কাছাকাছি হয়, তাই বলে চোখের পানি পর্যন্ত গড়ায় না। আমি আসলে সামলে নিয়ে ছিলাম আমাকে কিন্ত খেলা শেষে সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকের অশ্রু সজল ছবি ফেইসবুকে দেখে আর সামলে রাখতে পারলাম না। নিকোলাসকে ছবিটা দেখায়ে বললাম দেখ এই ছবিটা। এই ছবি দেখে ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ হবে, কারণ এর সাথে আমাদের অনেক ইতিহাস জড়িত আছে। আমাদের খেলোয়াড়দের চোখের পানি দেখলেই বুঝা যায় আমাদের দেশের প্রতি/আমাদের প্রতি তাদের ভালোবাসাটা কত পবিত্র।

এশিয়া কাপ শুরুর আগে থেকেই বিখ্যাত ফেমিনিস্ট রাইটার Susan Brownmiller এর Against our will MEN,WOMAN and RAPE বইটা পড়ছিলাম। নিকোলাসকে বইয়ের কয়েকটা প্যরাগ্রাফ পড়ে শোনালাম যেখানে লেখাঃ

A stream of victims and eye witness tell how truckloads of Pakistani soldiers and their hireling razakars swooped down on village in the night rounding up woman by force. Some were raped on the spot. Others were carried off to military compounds. Weeping survivors of village razed because they were suspected of siding with the Mukti Bahini freedom fighters told of how wives were raped before the eyes of their bound husbands who were then put to death. Just how much of it was the work of Pakistani “regulars” is not clear. Pakistani officers maintain that men were too disciplined “for that sort of thing”
[পৃষ্ঠা ৭৯ প্যারাগ্রাফঃ ২]

In the middle of the January the story gained sudden credence. An Asian relief secretary of the World Council of Churches called a press conference in Geneva to discuss his two week mission to Bangladesh. The Reverend Kentaro Buma reported that more then 200000 Benglali woman had been raped by Pakistani soldiers during the nine month conflict, a figure that had been supplied to him by Bangladeshi authorities in Dacca. Thousands of raped women had become pregnant, he said. And by tradition no Muslim husband would take back a wife who had been touched by another man
[পৃষ্ঠা ৭৯ প্যারাগ্রাফঃ ৪]

Khadiga, thirteen years old, was interviewed by photojournalist in Dacca. She was walking to school with four other girls when they were kidnapped by a gang of Pakistani soldiers. All five were put in a military brothel in Mohammadpur and held captive for six months until the end of war. Khadiga was regularly abused by two men a day, others she said had to service seven to ten man daily. At first Khadiga said the soldiers tied a gag around her mouth to keep her from screaming. As the months wore on and the captive’s sprit was broken the soldiers devised a simple quid pro quo. They withheld the daily ration of food until the girls had submitted to the full quota.
[পৃষ্ঠা ৮২ প্যারাগ্রাফঃ ৫]

Kamala Begum a wealthy widow lived in Dacca suburb, when the fighting started she sent her two daughters into the countryside to hide. She felt she could afford to stay behind, secure in her belief that she was “too old” to attract attention. She was assaulted by three men, two Pakistanis and one razakar in her home.

[পৃষ্ঠা ৮৩ প্যারাগ্রাফঃ ২]

এই চার প্যারাগ্রাফ পড়ে শুনানোর পর নিকোলাস আমার পিঠে হাত দিয়ে বলে তোমরা একদিন ভালো করবে ফর শিওর! আজ হয়নি তো কি একদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম বিশ্বকাপ জয় করবে! আমি আশায় বুক বাঁধি, আমরা একদিন বিশ্বকাপ জয় করবোই!
অনেকেই বলেন খেলার মাঠে রাজনীতি নিয়ে আসা ঠিক না, আমিও তাই মনে করি। পাকিস্তানীদের সাথে অনেক হিসাব নিকাশ আমাদের এখনো বাকি আছে। রাজনীতির নোংরা ছোবলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বার বার বিকৃত হয়েছে, আওয়ামী কিংবা বি এন পি যে সরকার এসে নিজেদের মতো করে ইতিহাস পাল্টায়। তাই আমি খুঁজে ফিরি সত্যিকারের ইতিহাস।

MyOfficeDesk




Thursday, March 1, 2012

সুইজারল্যান্ডের গল্পগুচ্ছ [পর্ব দুইঃ অপেক্ষা]


ফ্রাইডে সারাদিন ক্লাস পরীক্ষা শেষে রাত ৯ টায় ঘরে ফিরতেই ইভেত হফারের প্রশ্ন, রাত তিনটায় বিমান বন্দর যাবা? মনে মনে চিন্তা করলাম আমারে কি কামড়াইন্না কুত্তায় পাগলাইছে যে আমি পায়ের ঘাম মাথায় তুলে সারা দিন কম্পিউটার প্রোগ্রাম লিখে এখন না ঘুমায়ে বিমান বন্দরে যাব ! নাহ যাবনা আমি খুব ক্লান্ত এখন ঘুমালে আগামী কাল দুপুর পর্যন্ত উঠতে পারবোনা উঠতে চাইও না বলে আমার ঘরের দিকে রওনা দিলাম। না মানে তুমি আমাকে সেদিন বাংলাদেশী কারী রান্না করে খাইয়েছো তাই ভাবলাম তোমাকে নিয়ে কোথাও খেতে যাই গেলে তোমারই লাভ বিমানবন্দরের পাশে একটা টিপিক্যাল স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট আছে!

ভেবে দেখ আবার, আমি অনেক দিন পর পর ওখানে খাই তুমি গেলে এক সাথে খাওয়া যাবে আমার জমানো কিছু টাকা আছে আমি আমার একজন কাছের মানুষকে রিসিভ করতে যাব ! চোখের সামনেই স্প্যানিশ রেস্টুরেন্টগুলার স্মোকড সেলমন মাছের উপর মাশরুম, সালাদ রেডওয়াইন আর খাবার শেষে ডেজার্ট হিসাবে হরেকরকম ফল দিয়ে করা ফ্রুট সালাদ বিভিন্ন স্বাদের আইসক্রিম ভাসতে থাকল। দশ সেকেন্ডের কল্পনা শেষ হবার পর মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললাম না মানে ইয়ে, আসলে খাবারের জন্য না বেশি প্রয়োজন হলে যেতে পারি তোমার সাথে তাছাড়া তোমার রাতে একা ড্রাইভিং করা ঠিক হবেনা যে দিন কাল পড়ছে। ছিনতাই-টিনতাই হচ্ছে রাতে। ইভেত মুচকি হাসি দিয়ে বলল গেলে এখনি শুকনা কিছু একটা খেয়ে ঘুমিয়ে পর রাতে ভালো ভুড়িভোজের জন্য পেট খালি রেখো । ছিনতাইকারির খেয়ে কোন কাজ নাই যে রাতে মাইনাস তাপমাত্রা আর বরফের স্তূপের উপর বসে থাকবে ছিনতাই করার জন্য এটা ইভেত ভালোই জানে তারপরও কিছু একটা বলতে হবে তাই বললাম।

তিনটা বাজার আগেই দরজায় টুকটুক শব্দে ঘুম থেকে উঠে ভারী পুলওভার গায়ে দিয়ে ইভেতের গাড়ীতে বসেই আবার ঘুম। বিমান বন্দরে আসার পর একবারে ঘুম ভাঙ্গে তাই রাস্তায় কোন গল্প হয়নি। বিমান বন্দরের এরাইভাল পয়েন্টে আসার পর দেখলাম লম্বাচুড়া সুন্দর মত এক লোককে ইভেত চুমু খাচ্ছে! লোকটা একটু বুড়া হলেও ভয়ানক রকম সুন্দর নিমিষেই তাকে সুন্দর আলীনাম দেয়া যায়। আবার মনে মনে ভাবলাম এ আল্লা বুড়ীর দেখি চরিত্র খারাপ! সাক্ষাত বয়ফ্রেন্ড থাকতে পরপুরুষের সাথে কি আবেগ! দেখেও না দেখার ভান করে অন্য দিকে তাকায়ে আছি এমন সময় সুন্দর আলি হ্যান্ড সেকের জন্য হাত বাড়িয়ে বলে হাই এই এম স্টেফান!

নাইস টু মিট ইউ বাংলাদেশি ইয়াংম্যান! আমি তোমার কথা অনেক শুনেছি ইভেতের কাছে। আসো আমরা একটা রেস্টুরেন্টে বসে গল্প করি। চিন্তা করে দেখলাম শুভকাজে দেরি করা ঠিক হবেনা তাই বললাম লেটস গো। ইভেত আমি আর স্টেফান বসে আছি একটা নিরিবিলি রেস্টুরেন্টে, এমনিতে এখানকার দামি রেস্টুরেন্ট গুলা তুলনামুলক ভাবে একটু কম ব্যস্ত থাকে আর রাতে তো আরো কম। সর্বসাকুল্যে ২ টা টেবিলে মানুষ আর সব ফাকা। কিছু একটা আলাপ করতে হবে তাই বললাম, স্টেফান তুমি কি কর? “আই ইউজ টু বি অ্যান এয়ার পাইলট ইন মাই ইয়াংগার লাইফ নাও এই এম এন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারসুন্দর আলী হাসি মুখে বলে। পাইলটের কাজ কি সেটা আমি জানি কিন্তু এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ার কি করেন সেটা আমার ভালো জানা নেই, আপাতত জানার ইচ্ছা নাই কারণ এরই মাঝে খাবার এসে গেছে।
খাবার দাবার শেষে এবার ড্রিংকস পর্ব। 

আমি ভাবলাম এদের গল্পে কাবাবের হাড্ডি না হয়ে বরং আমি অন্য দূরে একটা টেবিলে বসি। একটা ককটেল ড্রিংকস নিয়ে আমি কোনার একটা টেবিলে টিভি দেখার অজুহাতে চলে আসি কিন্তু ছোটবেলা থেকে আড়চোখে তাকানো আমার স্বভাব [ ভালো ছাত্রদের পরীক্ষার খাতা দেখতে গিয়ে এই স্বভাবটা আমার পার্মানেন্ট হয়েগে ছে] তাই ফাকে ফাকে ওদের ও খেয়ালে রাখলাম। এক পর্যায়ে দেখি ইভেত লম্বা সময়ের জন্য স্টেফানকে চুমু খাচ্ছে অনেকটা দূর থেকে দেখলে চুম্বকের কারনে দুইটা মুখ একসাথে লেগে আছে টাইপের মনে হয়। তারপরই শেষ স্টেফান বিদায় নিয়ে হোটেলে চলে গেছে আমরা দুইজন গাড়ীতে উঠেছি বাসায় ফিরব বলে। আমার মনে নানান প্রশ্ন। প্রথমে জানতে চাইলাম ইভেত লোকটা কে? তুমি তো দেখলাম ভালোই দেখাইলা চুমায়ে টুমায়ে একদম আলুর ভর্তা বানায়ে ফেলেছ। সে হাসি মুখে বলল, ওমা আমার ভালো লাগার মানুষকে আমি চুমু দিবোনা তো কাকে দিবো আর তোমার এত আগ্রহ কেন? আমি বললাম না মানে ইয়ে তোমার তো বয়ফ্রেন্ড আছে আর আমি প্রাচ্যদেশ থেকে এসেছি তাই একজন মাঝবয়সী মহিলাকে অপরিচিত একটা মানুষকে লম্বা সময় ধরে চুমু দিতে দেখাটা আমার কাছে একটু ব্যতিক্রমী মনে হয়েছে তাই জানতে চেয়েছি, তারপরও আমি স্যরি বলে নিলাম আমার এই প্রশ্নের জন্য।

ইভেত এবার হাসি না দিয়ে একটু গম্ভীর হয়ে বলে," সে এক লম্বা কাহিনী তোমাকে কোনদিন বলা হয়নি। শোন স্টেফান আমার হাজব্যান্ড । আমরা একে অন্যকে চল্লিশ বছর ধরে চিনি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দিন গুলো থেকে শুরু। আমি ফাইনআর্টসে পড়তাম আর স্টেফান ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। আমাদের প্রথম পরিচয় হয় ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়ামে। স্টেফান ইঞ্জিনিয়ার হলেও সে ভাস্কর্য পছন্দ করত, ল্যুভর মিউজিয়ামের গ্রাউন্ডফ্লোরে যে ভাস্কর্যের গ্যালারিটা আছে ওখানে একটা প্রদর্শনীতে আমরা জানতে পারি আমরা দুইজনই সুইজারল্যান্ড থেকে এসেছি এবং আমরা একই ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। বিদেশের মাটিতে দেশি মানুষ দেখলে এমনি একটু সফট কর্ণার তৈরি হয় সে থেকেই আলাপ তারপর ভালো লাগা এবং ভালোবাসা। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে আমরা একসাথে থাকা শুরু করি তারপর বিয়ে তারপর আমাদের লম্বা সুখের দিন। আমার দুই মেয়ে ক্যাথরিন আর সিন্দ্রেলাকে তো তুমি দেখেছোই।"

হ্যাঁ দেখেছি কিন্তু তোমাদের সুখের দিন শেষ হল কেন, আমি জানতে চাইলাম। সে দম নিয়ে আবার বলতে শুরু করল,
"
স্টেফান ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে সুইস বিমানবাহিনীতে জয়েন করে। কিছুদিন চাকরি করার পর সে প্রাইভেট বিমানে জয়েন করে। প্রাইভেট বিমানেতো জানোই যত পরিশ্রম তত টাকা। আমাদের দিন গুলো খুব ভাল যাচ্ছিল দুই মেয়ে বড় হয়ে যাবার পর স্টেফান সিদ্ধান্ত নিল আর টাকার প্রয়োজন নেই এবার একটু ফ্লাইট কমিয়ে দিব কিছুটা সময় রিলাক্সের জন্য রাখা হবে ।

আমি ঠিক করলাম স্টেফানসহ আমরা দুইজন একটা থাইল্যান্ডের ম্যাসাজ পার্লারে যাব, বডী ম্যাসাজ করালে শরীর সুস্থ থাকবে। জেনেভা শহরে তখন এই জাতীয় ম্যাসেজ পার্লার বিষয়টা নতুন, ব্যাপারটা হচ্ছে তোমাকে কিছু মানুষ শরীর ম্যাসাজ করে দিবে বিভিন্ন রকম হারবাল অয়েল দিয়ে পরে ম্যাসাজ শেষে তুমি কুসুম গরম পানিতে স্পাকরে তারপর বাসায় ফিরবে। এই ম্যাসেজ পার্লার গুলার ম্যনেজার থেকে শুরু করে মোটামুটি সবাই মহিলা। এখান থেকেই সর্বনাশের শুরু ! সিল্ভিয়া নামে থাইল্যান্ডের একমহিলা নিয়মিত ম্যাসাজ করে দিত স্টেফানকে এরই মাঝে কখন ওদের মাঝে প্রণয় হয়ে গেছে আমি বুঝতেই পারিনি। এমন কি আমার একজন বন্ধু প্রথম দিকে সাবধান করে দিয়েছিল এটা বলে যে সে স্টেফানকে সিল্ভিয়ার সাথে দেখেছে ইটালিয়ান রেস্টুরেন্টের কোনায় বসে হাসি হাসি মুখ করে গল্প করতে! আমি পাত্তাই দেইনি কারন আমি বিশ্বাস করতাম যে মানুষটার সাথে আমি তিরিশ বছর ধরে এক সাথে হাসিকান্না শেয়ার করেছি সে কিছুতেই এত বিশ্বাসঘাতক হতে পারেনা তার উপর পাইলট হবার কারনে তাকে বিভিন্ন শহরে যেতে হয় একটা দুইটা মেয়ের সাথে রেস্টুরেন্টে খেলে আর এমন কি? তবে মাঝেমাঝে আমাকে না জানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেত স্টেফান যেটা আমার একদমই ভালো লাগতো না।


খুব খারাপ লেগেছে যখন দেখি একদিন সিল্ভিয়ার সাথে গভীর আলিঙ্গনরত অবস্থায় জেনেভা শহরের বার্ষিক ফায়ার ওয়ার্কসের আলোকছটা দেখছে অথচ বাসা থেকে বের হবার সময় স্টেফান বলে গিয়েছিল সে তার কোন এক পাইলট বন্ধুর বাসায় যাচ্ছে! আমি খুব পাশ দিয়ে হেটে গেলেও তার সামনাসামনি যাবার সাহস আমার ছিলোনা কারণ মনে হয়েছিল এত বছরের কাছের মানুষটিকে এই অবস্থায় দেখে হয়তো কোন অঘটন ঘটায়ে ফেলতে পারি। বাসায় এসে অনেকক্ষণ বালিশে মুখ গুঁজে কেঁদেছি। তারপর থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছি যে মানুষটার সাথে আমার এতগুলা বছর কেটেছে তাকে বিদায় দেবার। এক সময় আমি নিজে থেকেই বলেছি স্টেফানকে আমার জীবন থেকে চলে যেতে, কারন আমি চাই স্টেফান যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক প্রতিটা দিন তার আনন্দঘন কাটুক। গত তিন বছর ধরে স্টেফান সিল্ভিয়ার সাথে সিঙ্গাপুরে থাকে মাঝে মাঝে কাজে জেনেভা আসে আমি জানি সে আমাকে ভুলতে পারেনি তাই আসার আগে আমাকে জানায়। আর আমার বয়ফ্রেন্ড পিটারকে তো তুমি দেখেছ, নিঃসঙ্গতা কাটাতে আমি বেছে নিয়েছি কিন্তু এখনো আমার সমস্ত পৃথিবী জুড়ে আছে স্টেফান ! এই মানুষটাকে আমি শেষ নিঃশ্বাসের আগে কোনদিন ভুলতে পারবোনা।"

গল্প শেষে আমরা বাসায় ফিরে এসেছি, ইভেত বলল, তোমার সময় থাকলে আমি তোমাকে আমাদের পরিবারের এলবাম দেখাতে পারি। দুইজন দুইটা কফি নিয়ে এলবামের ম্যাটপেপারে ছবি দেখছি, সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ইভেত তার ছবি গুলা সাজিয়েছে। সত্তরের দশক আশির দশক -নব্বইয়ের দশক এবং দুই হাজার সালের পরের দিন গুলা। সত্তরেরে দশকের ছবি গুলা দেখানোর সময় খেয়াল করলাম ইভেতের চোখ মুখ অনেক উজ্জ্বল একে একে আমাকে ছবির সাথে সংশ্লিষ্ট গল্প বলছে, আশির দশকের ছবি গুলার ছবি তার সাথে তার মেয়েদের বড় হবার গল্প আরও নানান গল্প। আমি খুব যত্ন করে খেয়াল করলাম এলবামের পাতা যতই সামনে যাচ্ছে ততই ইভেতের মুখ চোখ মলিন হয়ে আসছে সমানুপাতিক হারে।
শেষ একটা ছবিতে ইভেতের চোখ দেখলাম বেশ কিছুক্ষণ স্থির হয়ে রইল, সে আমাকে ছবিটা দেখায়ে বলল এই ছবিটাই হয়তো আমাদের একসাথে সুখী জীবনের শেষ ছবি। আমরা লস আঞ্জেলেস গিয়েছিলাম বেড়াতে ওখানেই তোলা, বলতে বলতে টপ করে এক ফোঁটা জ্বল ইভেতের চোখ থেকে ছবিটার উপর পড়ল। ছবিটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে ভেবে টিস্যু দিয়ে মোছার জন্য ইভেত টিস্যু খুঁজতে শুরু করে, আমি খেয়াল করলাম আমার নিজেরও আশেপাশের সব কিছুই তুলনামুলকভাবে ঘোলাটে মনে হচ্ছে। টিস্যু দিয়ে ছবিটা পরিষ্কার করার সময় আমি আমার ডানহাতটা ইভেতের কাধে রেখে বললাম থিঙ্কস উইল বি ফাইন! অলদো আই ডোন্ট প্রে দিজ ডেজ বাট আই ইউজ টু প্রে ইন মাই চাইল্ডহুড। মাই অল বেষ্ট উইশেস উইল বি উইথ ইউ

ইভেতের বাড়ী থাকার সময় আমি মাঝেমাঝে খেয়াল করতাম ইভেত দুই হাত বুকের কাছে গুটিসুটি বেধে দরজায় কারো জন্য অপেক্ষা করছে আর খোলা মাঠের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে, কি জানি হয়তো স্টেফানের জন্য, এই অসম্ভব মমতাময়ী মানুষটার জন্য আমার দেবার কিছুই নেই। শুধু প্রার্থনা রইল কোন তুষারশুভ্র সকাল, বৃষ্টি ভেজা দুপুর কিংবা জোছনাস্নাত রাতে যেন স্টেফান একগুচ্ছ গ্লাডিওলাসসহ ইভেতের ছোট্ট পৃথিবীতে স্থায়ীভাবে ফিরে আসে!

*************** ********************

গল্প শেষে ইভেত হফার কে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। সুইজারল্যান্ডে সব চেয়ে কঠিন ব্যাপার একটা ভাল বাড়ী [বাসা] পাওয়া। আমি প্রথমে এসে ৩ দিন হোটেলে থেকেছি তারপর কোনভাবে সাপ্তাহিক ভাড়া দিয়ে ইভেতের বাড়ীর চিলেকোঠায় একটা ঠাই। তার তিন মাস পর ইউনিভার্সিটি থেকে এপার্টমেন্ট পেয়েছি। যে কটা দিন ইভেতের বাড়ীতে ছিলাম প্রথম দিকের দিনগুলাতে নানান বিষয়ে তার সাথে আমার খিটিমিটি লেগেই থাকত। নতুন বাড়ীতে আসার পর মনে হলো ঝগড়াবিহীন জীবনটা বড়ই পানসে!আজব আজব সব বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো , যেমন সকালে গোসল করে কাপড় না ধুয়েই ইউনিভার্সিটি চলে এসেছি ফিরে গিয়ে দেখি ইভেত কাপড় গুলা ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে শুকায়ে ইস্ত্রি করে আমার পড়ার টেবিলে একটা চিরকুট সহ রেখে গেছে, চিরকুটে লেখা এইবারই শেষ! আর কোনদিন বাথরুমে কাপড় ভেজায়ে রেখে গেলে আমি নতুন ভাড়াটিয়া খুঁজতে বাধ্য হবো। আমি চিরকুট হাতে নিয়ে যুদ্ধংদেহি মুডে গিয়ে বলতাম দেখ আমি তোমাকে কাপড় ধুয়ে ইস্ত্রি করে রাখতেও বলিনি আবার হুমকি ধমকি দিতেও বলিনি। আর শোন আমি তোমার বাড়ীতে কিন্তু মাগনা থাকিনা
গুনে গুনে টাকা দিয়ে থাকি তাই তোমার করুণা না দেখালেও চলবে। যেদিন ভাল এপার্টমেন্ট পেয়ে যাব ঠিক সেদিনই চলে যাব তোমাকে বিরক্ত করবোনা । আমি খুব ভাল করেই জানতাম প্রতিদিন এই কাজটা করলেও সে আমাকে বিদায় করে দিবেনা তাই মাঝে মাঝে ইচ্ছে করেই এটা করতাম। যে কয়বার ইভেতের ভয়াবহ ঝাড়ি খেয়েছি তার বেশির ভাগই অগোছালো থাকার জন্য!ইভেতের ফেইস বুক একাউন্ট আছে আমার বন্ধু লিস্টে যারা আছেন তারাতো দেখতে পাবেনই আর যারা দেখতে চান [Yvette Hofer] দিয়ে সার্চ করলেই দেখতে পাবেন।
*************** *********************


আমার লেখাগুলো আমার পড়ার টেবিলের ভাঙ্গা টেবিল ল্যাম্প , বিভিন্ন ভাষার গল্পের বই, এসট্রেতে রাখা আধ খাওয়া সিগারেট, কিংবা দুইদিন আগে খেয়ে রাখা না ধোয়া কফি মগের মতই অগোছালো! যারা প্রচণ্ড গোছানো লেখা পড়ে অভ্যস্ত আমি জানি এই জাতীয় হাবিজাবি লেখা আপনাদের ভালো লাগবেনা, তাই অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিলাম।
=================================
মাহমুদ
ফেইস বুক আইডিঃ
Mahmud Geneva
ব্লগঃ http:// www.nil-pipra.blogspot.com/